কুরবানির ত্যাগের শিক্ষা

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা - ইবাদত | | NCTB BOOK
2

কুরবানি বলতে শুধু গরু, ছাগল, মহিষ, দুম্বা ইত্যাদি জবাই করা বোঝায় না। বরং এর দ্বারা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন বোঝায়। কুরবানি আল্লাহর নবি হযরত ইবরাহিম (আ.) ও হযরত ইসমাইল (আ.) এর অতুলনীয় ত্যাগের স্মৃতি বহন করে। এর মাধ্যমে মুসলমানগণ ঘোষণা করেন যে, তাদের কাছে নিজ জানমাল অপেক্ষা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মূল্য অনেক বেশি। তারা পশুর গলায় ছুরি চালিয়ে এর রক্ত প্রবাহিত করে আল্লাহর কাছে শপথ করে বলে, “হে আল্লাহ! তোমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেভাবে পশুর রক্ত প্রবাহিত করছি, প্রয়োজনে আমাদের শরীরের রক্ত প্রবাহিত করতেও কুণ্ঠিত হব না।” কে কত টাকা খরচ করে পশু ক্রয় করেছে, কার পশু কত মোটা তাজা, কত সুন্দর আল্লাহ তা দেখতে চান না। তিনি দেখতে চান কার অন্তরে কতটুকু আল্লাহর ভালোবাসা ও তাকওয়া আছে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন :

অর্থ: “কখনো আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না এগুলোর গোশত এবং রক্ত বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।” (সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত ৩৭)

আত্মত্যাগ ও আত্মসমর্পণের মূর্ত প্রতীক ছিলেন হযরত ইব্রাহিম (আ.) ও হযরত ইসমাইল (আ.)। মানুষের জীবনে এ শিক্ষা গ্রহণ করলে তারা হয়ে উঠবে একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল, পরোপকারী ও আত্মত্যাগী। আত্মত্যাগী মানুষই সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। নিজের সুখ শান্তির বাইরে যারা সমাজের মানুষের সুখকে বড় করে দেখে, তারাই প্রকৃত মানুষ। কুরবানির ত্যাগের শিক্ষা আমাদেরকে পরোপকারে উৎসাহিত করবে ও মানবতাবাদী চেতনার বিকাশ ঘটাবে।

কাজ : 'কুরবানির শিক্ষা মানুষকে আত্মত্যাগী ও পরোপকারী হতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীরা দলে বিভক্ত হয়ে এ বিষয়ে বিতর্কের আয়োজন করবে। শিক্ষক মহোদয় বিচারকের ভূমিকা পালন করবেন।
Content added || updated By
Promotion